স্যাটেলাইট (Satellite)
স্যাটেলাইট হলো মহাকাশে উৎক্ষেপিত বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবিত কৃত্রিম উপগ্রহ। পৃথিবীর চারদিকে প্রদক্ষিণ করানোর জন্য আধুনিক স্যাটেলাইট বা কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহগুলোকে বায়ুমণ্ডলের বাইরে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে বিশেষ ধরনের চি তারবিহীন রিসিভার/ট্রান্সমিটার সংযুক্ত করে স্থাপন করা হয়ে থাকে। স্যাটেলাইট শব্দের অর্থ হলো উপগ্রহ। আমরা জানি, চাঁদ হলো পৃথিবীর উপগ্রহ। তাহলে স্যাটেলাইট বলতে কি নতুন কোনো চাঁদকে বুঝানো হয়? আসলে চাঁদ হলো পৃথিবীর একমাত্র প্রাকৃতিক উপগ্রহ আর মানুষ তৈরি করেছে কৃত্রিম উপগ্রহ; যেগুলো চাঁদের মতোই পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। তবে চাঁদ পৃথিবীকে মাসে একবার প্রদক্ষিণ করলেও কৃত্রিম উপগ্রহগুলো পৃথিবীকে ২৪ ঘণ্টা বা একদিনে একবার করে প্রদক্ষিণ করে। এর কারণ হলো, পৃথিবী থেকে উপগ্রহগুলোর দূরত্বের ওপর-এর পৃথিবীকে প্রদক্ষিণের সময় নির্ভর করে। পৃথিবী থেকে যদি মাত্র ১৩০ মাইল দূরত্বে কোনো উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট স্থাপন করা যায় তাহলে সেটি মাত্র ৯০ মিনিটে পৃথিবীকে একবার ঘুরে আসতে পারে। চাঁদ পৃথিবী থেকে প্রায় ২৪ হাজার মাইল দূরত্বে অবস্থিত। তাই তার কক্ষপথ অনেক বড় এবং পৃথিবীকে প্রদক্ষিণে এর সময় লাগে একমাস। কিন্তু কৃত্রিম উপগ্রহগুলো তাদের সেবার সুবিধাের্থে এখন খুব সহজেই তা পরিমাপ করে বের করা যায়।
স্যাটেলাইট এর ব্যবহার
আবহাওয়ার পূর্বাভাস, টেলিভিশন রেডিও যোগাযোগ, ইন্টারনেট যোগাযোগ এবং গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম (Global Positioning System-GPS) এর মতো বিভিন্ন যোগাযোগমূলক কাজে স্যাটেলাইট ব্যবহৃত হয়। যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত স্যাটেলাইটগুলোকে বলা হয় কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট। বিভিন্ন ধরনের গোপন মিশন পরিচালনা, জাতীয় নিরাপত্তার সাথে সম্পর্কিত ক্ষেত্রগুলোতে স্যাটেলাইট কমিউনিকেশন ব্যবহার করা যায়। টেলিযোগাযোগ, বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল তথ্য (টেক্সট, শব্দ, স্থির, সচল ছবি) সঞ্চালন, পৃথিবীর বাইরে নভোযান থেকে ভূ-পৃষ্ঠের সাথে যোগাযোগ, বিভিন্ন 9 ধরনের যানবাহনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা ইত্যাদির জন্য স্যাটেলাইটগুলো ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পৃথিবীতে প্রাপ্ত কয়েক ধরনের স্যাটেলাইটের মধ্যে রয়েছে ওয়েদার স্যাটেলাইট, কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট, নেভিগেশন স্যাটেলাইট, আর্থ অবজারভেশন স্যাটেলাইট, মিলিটারি স্যাটেলাইট ইত্যাদি।

